সোমবার, ডিসেম্বর ৪, ২০২৩

কলেজে ভর্তি হতে না পারায় আত্মহত্যার চেষ্টা, প্রাণ বাঁচালেন মানবিক ওসি

আপডেট:

  • জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
  • জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা এলাকার এক ছাত্র জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি (ভোকেশনাল শাখা) থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও পরিবারের অভাব-অনটনের কারনে কলেজে ভর্তি হতে না পারায় পরিবারের কাউকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে সড়কে দাঁড়িয়ে ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন ওই ছাত্র। এদিকে প্রতিদিনের মতো উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতের বেলায় ওই পথে টহল দিচ্ছিলেন পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জাহিদুল হক। দূর থেকে গাড়ি আলোয় দেখতে পান কেউ একজন ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন। তখন দ্রুত গাড়িটি ওই ছাত্রের সামনে দাঁড় করিয়ে ওসি গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে ওই ছাত্রকে রাস্তার পাশে নিয়ে গিয়ে তার প্রাণ বাঁচায়।
ওই ছাত্রের মা-বাবা বলেন, কিছু দিন আগে স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় এ-প্লাস পেয়ে পাশ করিছে। ছেলের পাশের খবর শুনে বুকটা আনন্দে ভরে গেলেও ছেলে কলেজে ভর্তি করে দিতে না পারার দুঃখে আমরা হতাশায় দিন পার করছিলাম। সেদিন ছেলে এসে বললো মা আমি কলেজে ভর্তি হব টাকা দিবেনা? তখন আমি একটু রাগ করেই বলেছিলাম তোর পড়শোনা করা লাগবিনা, তুই কাজ কাম করেক। তোকে আর পড়াশোনা করা লাগবেনা। এই বলে ছেলেও মন খারাপ করে বাড়ী থেকে বেরিয়ে যায়। রাতের বেলায় কাউকে না জানিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশে ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিল। ওই রাস্তা দিয়ে পাঁচবিবি থানার ওসি যাওয়ার সময় আমার ছেলের প্রাণ বাঁচায় এবং পরের দিন সকালে আমাদের থানায় দেখা করতে বলে। সকালে থানায় গেলে আমাদের নাস্তা করে বলেন আপনাদের ছেলের কলেজের ভর্তি খরচ আমি নিলাম। এই শুনে চোখ দিয়ে আমাদের আনন্দের জ্বল চলে আসে। ভগবান মানবিক এই ওসির ভালো করুক। ছেলে এখন কলেজে যাচ্ছে।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, জনগণের জানমালের নিরপত্তায় কাজ করছেন পুলিশ। সেদিন রাতে পাঁচবিবি উপজেলার সীমান্তবর্তী বাগজানা এলাকায় টহলে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই গাড়ীর আলোয় দেখতে পাই কেউ একজন ট্রাকের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছে। তখন ড্রাইভারকে দ্রুত গাড়ি চালাতে বলি আর অবশেষে ছেলেটার সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করালে ছেলেটি ভয় পায়।
তিনি আরো বলেন, পরে ছেলেটির কাছ থেকে আত্মহত্যার কারন জানতে চাইলে সে বলেন এবছর জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করেছে কিন্তু পরিবারের অভাবের কারনে সে কলেজে ভর্তি হতে পারেনি একারনে হতাশায় নিজের জীবন শেষ করে দিতে চায়। রাতের বেলায় ছেলেটাকে নিরাপদে বাড়ী পৌঁছে দিয়ে সকালে মা-বাবাকে নিয়ে থানায় আসতে বলি। এদিকে বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম স্যারকে জানালে তিনি ছেলেটার কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার নির্দেশে ওই ছেলে কলেজে ভর্তি করে ওর দায়িত্ব আমরা পাঁচবিবি থানা পুলিশ নিয়েছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত