
মোঃ সাইদুল ইসলাম: দুয়ারে কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল আযহা। ঈদকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে জমে উঠেছে দেশের সর্ববৃহৎ শার্শা উপজেলার সাতমাইল কুরবানির পশুর হাট। তবে বর্তমান পেক্ষাপটে সব ধরনের পণ্যের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি গো খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচের তুলনায় কাঙ্খিত দাম না পেয়ে চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। এদিকে বাড়তি দামে চাহিদামতো গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দক্ষিনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শার্শার সাতমাইল পশুহাটটি দেশীয় গরুতে জমজমাট হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন জাতের দেশি গরু ছাগল মহিষে বাজার পরিপূর্ণ হলেও মুখে হাসি নেই খামারি, সাধারণ ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের।
নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে গো খাদ্যের দামও দ্বীগুন হওয়ায় কুরবানির পশুর দাম ডবল হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ী ও খামারীরা। তবে দ্বীগুন দাম শুনে গরু কেনার সক্ষমতা হারিয়ে বাড়ি ফিরছেন কুরবানি দিতে আগ্রহ প্রকাশ করা অনেক ক্রেতা। এদিকে সাধারণ গরু বিক্রেতারা জানান দূরদূরান্ত থেকে গরু হাটে নিয়ে এসে কাঙ্খিত দাম মিলছে না। যার ফলে এবার কুরবানির হাটে লাভ তো দূরের কথা চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে।
সাধারণ ব্যবসায়ী ও খামারিরা জানান, একটি ছোট সাইজের গরু ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হবে। তা না হলে পুঁজিই টিকবেনা। অন্যদিকে বড় সাইজের গরুর দামও আগের তুলনায় অনেক বেশি। গো-খাদ্যর দাম ডাবল হওয়ায় আমাদেরকেও বাড়তি দাম চেতে হচ্ছে। কিন্তু বাড়তি দাম শুনে ক্রেতারা অর্ধেক দাম বলে চলে যাচ্ছেন।
ভারতীয় গরু না আসায় গতবছরের ন্যায় এবারো সাতমাইল পশু হাটে দেশীয় গরুর ব্যাপক আমদানি হয়েছে। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে এ বাজার থেকে গরু যায় দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে। তবে দ্রব্যমূল্যের বাড়তি চাপ কুরবানির হাটে প্রভাব ফেলায় গরু ক্রয় বিক্রয়ে খামারি, সাধারণ ব্যবসায়ী ও ইজারাদার প্রতিষ্ঠানেরও বড় ধরনের লসের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। অন্যদিকে হাটে শুশৃঙ্খল ভাবে যেন মানুষ পশু কেনাবেচা করতে পারে সে বিষয়ে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রশাসন।
হাট ইজারাদার সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াস কবীর বকুল জানান, ভারতীয় গরু আসায় দেশি গরুর ব্যাপক উপস্থিতি ও চাহিদা রয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর যে দাম তাতে করে খামারি ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। দামের প্রভাবে গরু ক্রয় বিক্রয় কম হওয়ায় আমাদেরও এই লসের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল বলেন, দক্ষিনাঞ্চলের সর্ববৃহৎ শার্শার সাতমাইল পশুহাটে যেন কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এবং ব্যবসায়ীরা যেন নির্বিঘ্নে তাদের পশু ক্রয় বিক্রয় করতে পারে এজন্য উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন।
এদিকে ভারতীয় গরু না আসায় এবার কুরবানিতে লাভের আশা করছিলেন খামারি, সাধারণ ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ইজারাদার প্রতিষ্ঠান। তবে শেষ সময় পর্যন্ত চতুর্মুখী সমস্যা কাটিয়ে অন্তত শেষ পুঁজি টুকু টিকে থাকবে এমনটাই মনে করেন ব্যবসায়ীরা।