
জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি উপজেলার মোট ১৭টি ইউনিয়ন ও ২ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-১ আসন। জয়পুরহাটে ২টি সংসদীয় আসনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদার আসনটি এটি। স্বাধীনতার পর প্রায় বেশিরভাগ সময়ই আসনটি ছিল বিএনপির প্রার্থীর দখলে। বর্তমানে এ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুই বারের এমপি আলহাজ্ব এ্যাডঃ সামছুল আলম দুদু।
জেলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ আসনটি দখলে রাখার নিরন্তর চেষ্টা প্রাই সব দলের। আগামী নির্বাচনে যে কোনো মূল্যে আসনটি নিজেদের দখলে নিতে চায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে জোরেশোরে। সেই সঙ্গে ভোটারদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাস্তবায়িত উন্নয়নের কথা। তবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ছাড় দিতে নারাজ বিএনপি। বিএনপির চেষ্টা আসনটিতে ঘুরে দাঁড়াতে। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত প্রার্থী নিয়ে চিন্তার কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা আন্দোলনের মধ্যে আছেন এবং আন্দোলন সফল হওয়ার পরই তারা প্রার্থী নিয়ে চিন্তাভাবনা করবেন। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী মনোনয়নের জন্য জোর লবিং করছে। এ আসনে আওয়ামী লীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত। এতে দ্বিধাবিভক্তিতে পড়েছে সাধারণ ভোটার। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন, বড় দলের বিভক্তি খুব স্বাভাবিক। তবে নির্বাচন এলে এ বিভক্তি থাকবে না। নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন।
এই আসনে বিএনপির অবস্থান ভালো থাকলেও দলটি দুুটি গ্রুপে বিভক্ত। এ আসনে বিএনপির ভোটার থাকলেও দলের বিভক্তির কারণে ভোটারদের মাঝে হতাশা বাড়ছে। নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
তবে, আওয়ামী লীগের কিছু নতুন প্রার্থী ছুটছেন মানুষের কাছাকাছি। গ্রাম-শহর সর্বত্রই ছুটে বেড়াচ্ছেন। সরকারের উন্নয়ন, মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কর্মকাণ্ড তুলে ধরছেন শহর, বন্দর ও গ্রামে-গঞ্জে। নিজেদের ক্লিন ইমেজের মনে করে নেতারা বলেন, সরকার এবারের নির্বাচনে দলকে আরও শক্তিশালী করতে মনোনয়ন প্রার্থীদের বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে। তবে আমাদের নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন, তার জন্যই কাজ করব ঐক্যবদ্ধভাবে।
সাধারণ ভোটাররা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ, এলাকার রাস্তাঘাট, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, সেতু, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ করাসহ যাঁদের দ্বারা আমাদের উন্নয়ন ঘটবে আমরা তাকেই ভোট দিব।
জয়পুরহাট-১ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছেন, জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান এমপি আলহাজ্ব এ্যাডঃ সামছুল আলম দুদু, জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.আরিফুর রহমান রকেট, সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, পিপি নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল, জয়পুরহাট পৌরসভার মেয়র মোস্তাক রহমান, পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান হাবিব ও জয়পুরহাট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম।
এদিকে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সেক্ষেত্রে জয়পুরহাট-১ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও প্রয়াত আব্দুল আলিম এমপির ছেলে ফয়সাল আলীম, জয়পুরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও প্রয়াত মোজাহার আলী এমপির ছেলে মাসুদ রানা প্রধান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফজলুর রহমান, জেলা বিএনপির যুগ্ম জ্যেষ্ঠ আহ্বায়ক গোলজার রহমান, সাবেক জেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ারুল হক আনু ও পাঁচবিবি উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এম এ গফুর মন্ডল।
অপরদিকে জাতীয় পার্টি থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক তিতাস মোস্তফা ও সভাপতি হেলাল উদ্দিন। আর বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর জয়পুরহাট জেলা আমির মাওলানা মোঃ ফজলুর রহমান সাঈদ মনোনয়ন চাইবেন।