
প্রধান শিক্ষক নেই ১২ বছর ধরে। শিক্ষক সংকট থাকায় আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে।’
দুর্লভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবক মো. আজাদ মিয়া বলেন, আমাদের স্কুলটি ব্রিটিশ আমলে ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক শাহেদ আলী। কিন্তু এখন শিক্ষকের অভাবে সঠিকভাবে লেখাপড়া হচ্ছে না। নানা জায়গায় আবেদন করেও শিক্ষক পাওয়া যাচ্ছে না। একজন শিক্ষক ৬/৭ মাস এক একা কোনোভাবে স্কুল চালিয়েছেন।’
শরীফপুর রাধাচরন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা বিজয় তালুকদার বলেন, ‘আমার বাবা খুব আশা করে গ্রামের উন্নতির জন্য নিজের জমিতে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কিন্তু মাস্টার না থাকায় ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া হয় না। একজন মাস্টার কী করে স্কুল চালায়?’
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উৎপল কুমার তালুকদার বলেন, ‘২০২০ সাল থেকে আমি একাই পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছি। কোনো কারণে আমি অসুস্থ হলে স্কুল বন্ধ থাকে। গত বছর আমি বিপিএডে গিয়েছিলাম, স্কুল শিক্ষকশূন্য ছিল। তখন দুইজন শিক্ষক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমি স্কুলে আসার পরদিনই তারা চলে যান। শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করে আসছি। কিন্তু শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই একাই তিন শ্রেণির ছাত্রকে একসঙ্গে পাঠদান করতে হচ্ছে।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আবদুর রহমান বললেন, ‘হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলায় ৪৯৩ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। এর মধ্যে তাহিরপুর উপজেলায় ৫৫টি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। যার কারণে শিক্ষক স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি সহকারী শিক্ষক পদায়নে পাশের এলাকায় নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ থাকায় সব বিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারিনি। যেখানে শিক্ষক স্বল্পতা দেখা দিয়েছে বা একজন শিক্ষক রয়েছেন সে বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে দ্রুত শিক্ষক দেওয়ার জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম দ্রুত চলছে। সে নিয়োগটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষক স্বল্পতা দূর হবে।’