
মোঃ সাইদুল ইসলাম, বেনাপোল প্রতিনিধিঃ-শার্শা উপজেলায় কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে সোনালি আঁশ। পাট থেকে সোনালি আঁশ ছাড়ানো ও রোদে শুকানোর কাজে ব্যস্ত সবাই। নদী-নালা ও খাল বিল থেকে জাগ দেওয়া পাট তুলে এনে তার থেকে আঁশ ছাড়ানো ও রোদে শুকানোর কাজ করছেন তারা । এ বছর পাটচাষে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পাট চাষীদের বিপাকে পড়তে হয়েছিল। তবু সোনালি আঁশের সোঁদা গন্ধে ও স্বপ্নের সোনালি আঁশ দেখে কৃষকদের মনে স্বস্তি ফিরেছে। তবে এ বছর পাটের ফলন ভালো হলেও আশানুরূপ মূল্য না-পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন চাষীরা।
দিনব্যাপী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এই উপজেলায় পাট চাষীর সংখ্যা প্রতিবছরই কমছে। কৃষক ধান চাষের দিকে ঝুঁকছে বেশি। অন্য বছরের তুলনায় এবছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানান চাষীরা। চাষিরা পাট কেটে তা নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাটে বাজারে তা বিক্রিসহ সব মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর পাটের বাজারমূল্য নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন চাষীরা। এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ৬০ হেক্টর থাকলেও এ বছর ৪০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে বলে জানান উপজেলা কৃষি বিভাগ।
এদিকে পাট চাষী শার্শা উপজেলার পোড়াবাড়ি নারানপুর গ্রামের পাট চাষি ফিরোজ আহাম্মদ বলেন, এখন পাট কাটা, পানিতে ডোবানো ও ধোয়ার কাজে আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি।এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে ছিল না। তবু পাটের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। শুর থেকে পাট শুকানো পর্যন্ত যা খরচ করেছি সেই অনুযায়ী পাটের মূল্য পাব কিনা জানি না। শুনছি এ বছর পাটের বাজার ভাল যাচ্ছে না। শার্শা উপজেলার নামাজ গ্রামের পাট চাষী ইয়ার আলী বলেন, এ বছর আমি প্রায়ই একশত পঞ্চাশ শতক জমিতে পাটচাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ত্রিশ হাজার টাকা। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় পাটচাষে আমাদের অনেক বেগ পেতে হয়েছে। তারপরও পাটের ফলনও ভালো হয়েছে। তবে আশানুরূপ মূল্য না পেলে আমি পাটচাষে ক্ষতিগ্রস্ত হব।
উপজেলার বড়আঁছড়া এলাকার পাট চষী জামাল হোসেন জানান, এ বছর তিনি ১ শত ২০ শতক জমিতে পাটচাষ করেছেন। এতে তাঁর খরচও হয়েছে অনেক। তাছাড়া এবার তেমন বৃষ্টি হয়নাই পাট কেটে জাগ দেওয়ারো কনো জায়গা নাই। মেশিন চালিয়ে খানা গর্তে পানি দিয়ে পাট জাগ দিতে হবে, এ কারনে এবার পাট চাষে চাষিরা আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।পাটের ফলনেও তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে পাটের বাজারমূল্য আশানুরূপ না পেলে পাটচাষে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা জানান, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে এ বছর পাটচাষ ব্যহত হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছরে এ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম জমিতে পাটচাষ হয়েছে। অধিকাংশ কৃষকই পাটচাষ ছেড়ে ধান চাষে আগ্রহী হয়ে পড়ছেন। তবে এ বছর পাটের ফলন ভালো হয়েছে। পাটের ন্যায্য মূল্য পেলে চাষিদের মাঝে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে।