শুক্রবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৩

০৭ নভেম্বর কি বিপ্লব দিবস না-কি মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস

আপডেট:

 

লেখক ঃ ইঞ্জিঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম।

তা ং ঃ ০৭. ১১.২০২৩

বিজ্ঞাপন

 

প্রতি বছর ০৭ ই নভেম্বর ঘুরে-ফিরে আসে আর বাঙালি প্রতারিত হয়! জাতীয়তাবাদী দল দিন টিকে “বিপ্লব ও সংহতি দিবস ” হিসাবে পালন করে, আওয়ামীলীগ “মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস”, জাসদ ” আম ও গেলো বস্তাও গেলো দিবস”। আসলে কি হয়েছিলো সেদিনের কিছু না জানা অন্তরালের কথা!

বিজ্ঞাপন

 

মুজিব সহ ২০ জন তার আপন জন হত্যার পর অভ্যূত্থানের দিনে ই খন্দকার মোশতাক প্রেসিডেন্ট হন, তখন ও জাতির জনকের লাশ সিড়িতে পড়ে ছিলো!

তার কেবিনেট ছিলো ২৫ জনের প্রেসিডেন্ট সহ। আশ্চর্য জনক হলেও সত্যি ২৫ জনের ২১ জন ছিলো বঙ্গবন্ধু কেবিনেটের, ওসমানী সর্বাধিনায়ক, প্রেসিডেন্ট আবুসায়িদ

ইত্যাদি। যারা ক্ষমতায় থাকেন তাদের পাশে কত বেঈমান থাকে তা তারা সচ্ছ চোখে খোঁজেন না বরং আসল আপনজনকে দূরে ঠেলে দেন!

 

দ্রুত মোশতাক তার বিশ্বস্ত “জিয়াকে” সেনা প্রধান করেন!

ফারুক রশীদ ডালিম নূর প্রেসিডেন্ট ভবনে, জিয়া সেনা প্রধান নাচে গানে ভরপুর দেশ শাসন! “ব্রিগেডিয়ার খালেদ ” গেরিলা বাহিনীর গুরু ছিলেন, সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, তিনি বার বার জিয়াকে অনুরোধ করেন “সেনা বাহিনীর চেইন অব কমান্ড” ফিরিয়ে আনতে ! কিন্তু জিয়া তা করতে অপারগ কারন “জিয়া” মুজিব হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে অবস্হান নিলে অনেক অন্তরালের কথা ফাঁস হয়ে যায়! কিন্ত খালেদ দৃঢ় প্রত্যায় চেইন অফ কমান্ড ফিরাতে, অনেক সেনা অফিসার ও সেপাই বঙ্গভবনে খুনিদের অবস্থান মেনে নিতে পারতেছিলো না !

 

বিগ্রেডিয়ার খালেদ সম্ভবত ২ রা নভেম্বর “জিয়াকে” নিরাপত্তা হেফাজতে হাউজ এ্যারেস্টের মত করে রাখেন এবং নিজে সেনাপ্রধান হতে “মোশতাকের” কাছে প্রেসিডেন্ট এ্যাপ্রুভালের জন্য দর কষাকষি করতে থাকেন!

অনেক লেখক খালেদ মোশাররফের পাল্টা অভ্যুত্থান বলে আখ্যায়িত করেন! আমার ম্যাথামেথিক্যাল ক্যালকুলেসনে তা বলে না, কারন

১. যার বিরুদ্ধে অভ্যূত্থান তার কাছে কেউ প্রমোশন চেয়ে দুই দিন অপেক্ষা করে?

২. জিয়া ফারুক রশীদ ডালিম গং কে হত্যা না করে কাউকে জামাই আদরে হেফাজতে কাউকে বঙ্গভবন ঘিরে রেখেও আলোচনা চালায়!

৩. সবচেয়ে জিয়ার বিরুদ্ধে ছিলো এয়ারফোর্স বাহিনী যা স্বইচ্ছায় বঙ্গভবনের উপর ফাইটার বিমান টহল দিতে থাকে!

মোশতাক ফারুক রশীদ গং যখন বুঝতে পারে আর ক্ষমতায় থাকা যাবে না তখন নেতৃত্ব শূন্য করতে ফাঁকে জেলখানা হত্যাকান্ড ঘটায়!

 

জিয়া তার বেড রুমের টেলিফোন লাইন কানেকশন আছে দেখে ফোনে “কর্নেল তাহের কে জানায়, ” আমার জীবন বিপন্ন আমাকে বাচাঁও!” তাহের ও তার ভাই অধ্যাপক আনোয়ার (যিনি ঢাকা জাসদ গন বাহিনী প্রধান ছিলেন) এগিয়ে আসেন! তাহের দ্রুত খালেদ মোশারফেকে সেপাই ও জনগনের কাছে একটা লিফলেট ছড়ায়ে বদনাম ছড়ায় দিয়ে আন পপুলার করে ফেলেন! লিফলেটে লেখা ছিলো

খালেদ মোশাররফ হায়দার হুদা সাফাত জামিল সবাই ভারতের চর, দেশ ভারতের হাতে চলে যাচ্ছে! সারা ঢাকা ছড়ায় দেয়া হয় খোলা পিক-আপে বসে!

 

সেনানিবাসে সাধারণ সেপাইদের বুঝানো হয়, কোন মেজর কর্নেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইত্যাদি অফিসার পদ থাকবে না! সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্হা। শ্লোগান দেয়া হয় “সেপাই সেপাই ভাই ভাই অফিসারের লাশ চাই, সিপাহী সিপাহি ভাই ভাই জেসিও ছাড়া পদ নাই! ইতিমধ্যে ১২ জন মুক্তিযোদ্ধা অফিসার হত্যা হয়ে যায়, মহিলা ডাক্তার সহ সম্ভবত সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী সাহেবের স্ত্রী কে ও হত্যা করা হয় কোয়ার্টারে যেয়ে!

 

ফোর বেঙ্গল টু ফিল্ড রেজিমেন্টের সৈনিকেরা এসে জিয়াকে হেফাজত থেকে বাইরে নিয়ে আসে খোলা ট্রাকে!

জিয়া রেডিও টিভিতে ভাষন দিয়ে নিজেকে প্রধান সামরিক মার্শাল প্রশাসন ঘোষনা করেন তখন ” আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম মোশতাকের জায়গায় প্রেসিডেন্ট। তার অনুমতি ও নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন নাই জিয়া এবং বোকা খালেদের মোশতাকের পিছে ঘোরার মত কোন কাজ করতে যান নাই ! মীর শওকতের উপর দায়িত্ব পড়ে খালেদ মোশাররফ হুদা হায়দার তিন সেক্টর কমান্ডার কে নিপাত করার, টেলিভিশন কেন্দ্রের চার স্বাধীনতা কামীকে হত্যা করার ব্যবস্হা হয়! রামপুরা ব্রিজের উপর চারজন কে রাতে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে ইট বেঁধে ব্রিজের নিচে ফেলে দেয়! নেতৃত্ব দেয় আমার থানায় বাড়ী, নায়েব সুবেদার মাসুদ ! খালেদ মোশাররফ সহ অন্যদের হত্যা করা হয় ১০ বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেসে! বোকা খালেদ অহেতুক

অভ্যূত্থানের (ক্যুর) মিথ্যা অপবাদ নিয়ে দুনিয়া ছাড়ে।

খোলা ট্রাকে জিয়া পথের জনগনকে হাত নাড়ায় হিরো হয়ে যায়! দেশ কে মসজিদে উলুধ্বনি থেকে রক্ষা করে খাটি মুসলমান ও প্রমানিত হন!

 

প্রিয় পাঠক, আল্লাহ বিশ্বাস ঘাতক বেঈমান মিথ্যা বাদীকে কে ছাড় দেন, ছেড়ে দেন না! যে জিয়া সেনানিবাসে বলেছেন, “কর্নেল তাহের আমার বন্ধু Ref : Professor Anwar) সেই জিয়া শত্রুর শেষ রাখতে নাই জানতেন এবং

২৪ শে নভেম্বর তাহের কে গ্রেফতার করেন ২১ শে জুলাই ফাঁসির দড়িতে ঝুলান! ছিন্নভিন্ন করে দেন ” জাসদকে”

ইনু রব মেজর জলিল সব বছরের পর বছর জেল খেটেখুটে আবার সেই মুজিব কন্যার অধীনে মন্ত্রী হয়েছেন

অনেক জাসদ নেতা! স্বাধীনতার পরপর বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে মুজিকে ক্ষতবিক্ষত না খাওয়া দেশকে ব্যবহার উপযোগী করার সময় জাসদ প্রথম বাধা,

সম্ভবত অধ্যাপক আনোয়ার সাহেককে ও কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করেছিলেন শেখ হাসিনা!

উল্লেখ্য, জিয়া তাহেরকে ফাঁসি দেয়ার মূল কারন হলো তাহেরের সেই মুহূর্তে রাজনৈতিক বেজ ছিলো জিয়া ছিলেন

শুধু সেনা অফিসার! জিয়ার মত নিষ্ঠুরতা খালেদ মোশাররফ দেখালে দেশের ইতিহাস ভুন্ন কালিতে লেখা হতো!

 

প্রিয় পাঠক, আর্টিকেল টা দেশবিদেশী লেখক, প্রত্যক্ষদর্শী,

নিজের জানা-শোনা মস্তিষ্কের স্টক থেকে লেখা, অজান্তে কোন ছোট খাটো ভুলভ্রান্তি থাকলে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থী!

বোকা খালেদ।

ধোঁকাবাজ তাহের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সংশ্লিষ্ট সংবাদ:

সর্বাধিক পঠিত